talking book banglatalkingbookbangla.org/wp-content/uploads/2020/09/bangla... · web...

1059
পপপপপপ পপপপপ পপপপ প পপপপপপপ

Upload: others

Post on 22-Mar-2021

6 views

Category:

Documents


0 download

TRANSCRIPT

পৃষ্ঠা ১

বাংলা ভাষা ও সাহিত্য

পৃষ্ঠা ২

সূচিপত্র

বাংলা সাহিত্য ২

বাংলা সাহিত্যের যুগবিভাগ ২

আদি বা প্রাচীন যুগ ৩

চর্যাপদ ৩

ডাক ও খনার বচন ১০

বাংলা লিপি ১০

মধ্যযুগ ১২

মধ্যযুগের শ্রেণিবিভাগ ১২

শ্রীকৃষ্ণকীর্তন ১৪

মৌলিক সাহিত্য ১৬

পদ বা পদাবলি ১৬

মঙ্গলকাব্য ১৯

জীবনী সাহিত্য ২৪

নাথসাহিত্য ২৫

মর্সিয়া সাহিত্য ২৫

লোকসাহিত্য ২৬

অনুবাদ সাহিত্য ৩০

আরাকান রাজসভায় বাংলা সাহিত্য ৩৭

অবক্ষয় যুগ ৪০

আধুনিক যুগ ৪৪

বাংলা গদ্যের উৎপত্তি ও বিকাশ ৪৪

শ্রীরামপুর মিশন ৪৫

ফোর্ট উইলিয়ম কলেজ ৪৬

হিন্দু কলেজ ও ইয়ংবেঙ্গল ৫০

রাজা রামমোহন রায় ৫০

বঙ্গীয় মুসলমান সাহিত্য সমিতি ৫২

বাংলা কথা সাহিত্য ৫৬

কথা-সাহিত্য ৫৬

উপন্যাস ৫৬

প্যারীচাঁদ মিত্র ৫৬

কালীপ্রসন্ন সিংহ ৫৮

বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় ৫৯

মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় ৬০

সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় ৬২

রাবেয়া খাতুন ৬৩

হুমায়ূন আহমেদ ৬৩

বিখ্যাত উপন্যাস ৬৭

গল্প বা ছোটগল্প ৭৩

বাংলা নাটক ৭৫

নাটক ৭৫

দীনবন্ধু মিত্র ৭৭

দ্বিজেন্দ্রলাল রায় (ডি. এল. রায়) ৮০

নুরুল মোমেন ৮১

মুনীর চৌধুরী ৮২

সেলিম আল দীন ৮৬

বিখ্যাত বাংলা নাটক ৮৮

বাংলা প্রবন্ধ ৯২

কালীপ্রসন্ন ঘোষ ৯৪

আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ ৯৫

ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ ৯৫

ডা. মোহাম্মদ লুৎফর রহমান ৯৬

ড. মুহম্মদ এনামুল হক ৯৭

পৃষ্ঠা ৩

মোতাহের হোসেন চৌধুরী ৯৭

মুহম্মদ আবদুল হাই ৯৮

ড. আহমদ শরীফ ৯৮

আবদুল্লাহ আল-মুতী শরফুদ্দিন ৯৯

বদরুদ্দীন ওমর ৯৯

বিখ্যাত প্রবন্ধ ১০০

বাংলা কাব্য ১০২

মদনমোহন তর্কালঙ্কার ১০২

রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায় ১০২

কৃষ্ণচন্দ্র মজুমদার ১০৩

বিহারীলাল চক্রবর্তী ১০৪

হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় ১০৫

কায়কোবাদ ১০৫

কামিনী রায় ১০৭

রজনীকান্ত সেন ১০৮

অতুলপ্রসাদ সেন ১০৮

কুসুমকুমারী দাশ ১০৮

যতীন্দ্রমেহন বাগচী ১০৯

সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত ১০৯

শেখ ফজলল করিম ১১০

সুকুমার রায় ১১১

মোহিতলাল মজুমদার ১১২

আধুনিক কবিতা ১১২

জীবনানন্দ দাশ ১১৩

সুধীন্দ্রনাথ দত্ত ১১৪

অমিয় চক্রবর্তী ১১৪

বিষ্ণু দে ১১৫

বন্দে আলী মিয়া ১২০

সমর সেন ১২০

ফররুখ আহমদ ১২০

সুভাষ মুখোপাধ্যায় ১২৩

আবুল হোসেন মিয়া ১২৩

সুকান্ত ভট্টাচার্য ১২৩

মাহবুব উল আলম চৌধুরী ১২৫

আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ ১২৬

মোহাম্মদ মুনিরুজ্জামান ১২৭

সুকুমার বড়ুয়া ১২৭

রফিক আজাদ ১২৭

নির্মলেন্দু গুণ ১২৮

আবুল হাসান ১২৯

হেলাল হাফিজ ১২৯

দাউদ হায়দার ১২৯

রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ ১৩০

কাব্যগ্রন্থ ১৩০

কবিতা ১৩১

বাংলা মহাকাব্য ১৩২

সাহিত্যিকদের উপাধি ১৩৩

সাহিত্যিকদের ছদ্মনাম ১৩৮

সাহিত্যিকদের প্রকৃত নাম ১৩৮

ভাষা আন্দোলনভিত্তিক সাহিত্য ১৪১

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক গ্রন্থ ১৪২

বাংলা সাহিত্যের দিকপাল ১৪৭

ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ১৪৭

মাইকেল মধুসূদন দত্ত ১৫২

সঞ্জীবচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ১৬২

নওয়াব ফয়জুন্নেসা চৌধুরাণী ১৬২

গিরিশচন্দ্র সেন (ভাই) ১৬৩

বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ১৬৪

মীর মশাররফ হোসেন ১৭০

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৭৪

পৃষ্ঠা ৪

প্রমথ চৌধুরী ২০৭

শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ২০৯

সৈয়দ ইসমাইল হোসেন সিরাজী ২১৪

রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন ২১৫

এস ওয়াজেদ আলি ২১৮

প্রিন্সিপাল ইব্রাহীম খা ২১৯

গোলাম মোস্তফা ২২০

আবুল মনসুর আহমদ ২২০

কাজী নজরুল ইসলাম ২২২

আরজ আলী মাতুব্বর ২৪৫

জসীমউদ্দীন ২৪৫

সৈয়দ মুজতবা আলী ২৫৩

বুদ্ধদেব বসু ২৫৫

সুফিয়া কামাল ২৫৬

আহসান হাবীব ২৫৯

শওকত ওসমান ২৬০

ড. নীলিমা ইব্রাহিম ২৬২

সৈয়দ আলী আহসান ২৬২

সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ ২৬৩

শামসুদ্দীন আবুল কালাম ২৬৭

আবু ইসহাক ২৬৮

শহীদুল্লা কায়সার ২৬৯

শামসুর রাহমান ২৭০

আলাউদ্দিন আল আজাদ ২৭৬

হাসান হাফিজুর রহমান ২৭৭

জহির রায়হান ২৭৮

সৈয়দ শামসুল হক ২৮১

আল মাহমুদ ২৮৪

হাসান আজিজুল হক ২৮৬

আখতারুজ্জামান ইলিয়াস ২৮৬

আহমদ ছফা ২৮৮

হুমায়ুন আজাদ ২৮৯

নামের সাদৃশ্য ২৯০

বিবিধ ২৯৪

বাংলা ভাষা

ব্যাকরণ কাঠামো

বাংলা ভাষা ২৯৬

ব্যাকরণ ৩১২

ধ্বনিতত্ত্ব

ধ্বনি ও বর্ণ ৩১৭

ধ্বনির পরিবর্তন ৩৩৫

ণ-ত্ব বিধান এবং ষ-ত্ব বিধান ৩৪০

সন্ধি ৩৫১

রূপতত্ত্ব

পদাশ্রিত নির্দেশক এবং অনুসর্গ ৩৮১

ধাতু, প্রকৃতি এবং প্রত্যয় ৩৮৪

উপসর্গ ৩৯৮

লিঙ্গ ৪১৩

বচন ৪২৪

পুরুষ বা পক্ষ ৪৩০

সমাস ৪৩২

কারক ও বিভক্তি ৪৭৬

শব্দ ৫০৪

দ্বিরুক্ত শব্দ ৫৩২

পদ প্রকরণ ৫৩৬

ক্রিয়ার কাল ৫৬৫

বাক্যতত্ত্ব

বিরাম চিহ্ন বা যতি চিহ্ন ৫৭৩

বাক্য ৫৮১

পৃষ্ঠা ৫

বাচ্য ৫৯৭

উক্তি ৬০১

বানান শুদ্ধিকরণ ৬০৩

বাক্য শুদ্ধিকরণ ৬৩২

উচ্চারণ ৬৪৪

অর্থতত্ত্ব

বাংলা অভিধান ৬৪৫

ছন্দ ও অলঙ্কার

ছন্দ ৬৪৮

অলঙ্কার প্রকরণ ৬৫৩

নির্মিতি

সমার্থক শব্দ ৬৫৫

বিপরীত শব্দ ৭০৯

পরিভাষা ৭৩৩

বাগধারা এবং প্রবাদ-প্রবচন ৭৪৮

শব্দের বিশিষ্ট প্রয়োগ ৭৮৮

বাক্য সংক্ষেপণ ৭৯৪

পত্রলিখন, সারাংশ এবং ভাব-সম্প্রসারণ ৮২৬

অনুবাদ, এবং শূন্যস্থান পূরণ ৮৩৩

সংবাদপত্র ৮৩৫

বিসিএস প্রিলিমিনারি প্রশ্নোত্তর ও ব্যাখ্যা ৮৪৩

বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষার সিলেবাস অনুযায়ী সূচি (পূর্ণমান: ৩৫)।

বিভাগ: বাংলা সাহিত্য মান; ৫, বিষয়বস্তু (পৃষ্ঠা নং); প্রাচীন যুগ (৩), মধ্যযুগ (১২)।

বিভাগ: মান; ১৫, বিষয়বস্তু (পৃষ্ঠা নং); আধুনিক যুগ (৪৪)।

বিভাগ: বাংলা ভাষা, মান; ১৫, বিষয়বস্তু (পৃষ্ঠা নং); প্রয়োগ-অপপ্রয়োগ (৬৩০), বানান ও বাক্য শুদ্ধি (৬০৩, ৬৩২), পরিভাষা (৭৩৩), সমার্থক ও বিপরীত শব্দ (৬৫৫, ৭০৯), ধ্বনি ও বর্ণ (৩১৭), শব্দ (৫০৪), পদ (৫৩৬), বাক্য (৫৮১), প্রত্যয় (৩৮৪), সন্ধি (৩৫১), সমাস (৪৩২)।

পৃষ্ঠা ৬

বাংলা সাহিত্য

বাংলা সাহিত্যের প্রবাদ পুরুষদের কিছু চিত্র।

পৃষ্ঠা ৭

বাংলা সাহিত্য

বাংলা সাহিত্যের যুগবিভাগ:

বাংলা সাহিত্যের যুগকে ৩ ভাগে ভাগ করা যায়। যথা-

ক্রম: ১, বাংলা সাহিত্যের যুগ; প্রাচীন বা আদিযুগ (৬৫০ থেকে ১২০০ খ্রি.), বৈশিষ্ট্য; (১) ব্যক্তি ও সমাজজীবন প্রধান। (২) ধর্ম গৌণ।

ক্রম: ২, বাংলা সাহিত্যের যুগ; মধ্যযুগ (১২০১ থেকে ১৮০০ খ্রি.), বৈশিষ্ট্য; (১) ধর্ম মুখ্য। (২) মানুষ হয়ে পড়ে গৌণ।

ক্রম: ৩, বাংলা সাহিত্যের যুগ; আধুনিক যুগ (১৮০১ খ্রি. থেকে বর্তমান), বৈশিষ্ট্য; (১) মানবীয় আবেদন মুখ্য।(২) স্বদেশ প্রেম, মানবতাবোধ ও ব্যক্তি স্বাধীনতা

MCQ Solution

১. বাংলা সাহিত্যের যুগকে কয় ভাগে ভাগ করা যায়?

উত্তর: ৩টি

২. বাংলা সাহিত্যের পঠন-পাঠনের সুবিধার জন্য বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসকে তিনটি যুগে ভাগ করা হয়েছে।(শূন্যস্থান) বাংলা সাহিত্যের প্রাচীন যুগ।

উত্তর: ৬৫০ থেকে ১২০০

৩. বাংলা ভাষার মধ্যযুগ

উত্তর: ১২০১ থেকে ১৮০০ খ্রিষ্টাব্দ

৪. বাংলা সাহিত্যে আধুনিক পর্ব শুরু হয় কত শতকে?

উত্তর: ১৯

৫. বাংলা ভাষার আধুনিক যুগের সূচনার সাল ধরা হয়?

উত্তর: ১৮০০

৬. আধুনিকতার লক্ষণ কি?

উত্তর: স্বদেশ প্রেম ও মানবতাবোধ

৭. কোন সাহিত্যাদর্শের মর্মে নৈরাশ্যবাদ আছে?

উত্তর: উত্তরাধুনিকতাবাদ

পৃষ্ঠা ৮

আদি যুগ বা প্রাচীন যুগ

চর্যাপদ (Charyapada):

বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের প্রাচীনতম শাখা হলো কাব্য। চর্যাপদ বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের প্রাচীনতম নিদর্শন। চর্যাপদ বাংলা ভাষার প্রথম কাব্য বা কবিতা সংকলন। চর্যাপদের কবিতাগুলো গাওয়া হতো; তাই এগুলো একইসাথে গান ও কবিতা। এটি বাংলা সাহিত্যের প্রাচীনযুগের একমাত্র লিখিত নিদর্শন।

চর্যাপদ আবিষ্কার:

১৯০৭ সালে ডক্টর হরপ্রসাদ শাস্ত্রী নেপালের রাজ দরবারের গ্রন্থাগার হতে ‘চর্যাচর্যবিনিশ্চয়’ নামক পুঁথিটি আবিষ্কার করেন। চর্যাপদের সাথে ‘ডাকার্ণব’ ও ‘দোহাকোষ’ নামে আরও দুটি বই নেপালের রাজ গ্রন্থাগার হতে আবিষ্কৃত হয়। হরপ্রসাদ শাস্ত্রীর সম্পাদনায় ‘বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ’ থেকে ১৯১৬ সালে সবগুলো বই একসাথে ‘হাজার বছরের পুরাণ বাঙ্গালা ভাষায় বৌদ্ধগান ও দোহা’ নামে প্রকাশিত হয়।

সপ্তম থেকে দ্বাদশ শতাব্দীর মধ্যবর্তী সময়ে চর্যাপদগুলো রচিত। বাংলার পাল বংশের রাজারা ছিলেন বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী। তাদের আমলে চর্যাগীতিগুলোর বিকাশ ঘটেছিল। ‘চর্যাপদ’ সহজিয়া বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের সাহিত্য। বৌদ্ধ তান্ত্রিক সহজিয়া ধর্মের সাধন রীতির নিগূঢ় সংকেতই চর্যাপদের প্রধান লক্ষ্য। গ্রন্থের নামেও এ লক্ষ্য স্পষ্টত অনুভব করা যায়। নেপালে প্রাপ্ত পুঁথিটিতে গ্রন্থের নাম বর্ণিত হয়েছে ‘চর্যাচর্যবিনিশ্চয়’ বলে অর্থাৎ পুঁথির পদগুলোর সাহায্যে কোনটি চর্য (আচরণীয়) আর কোনটি অ-চর্য (অনাচরণীয়) তা বিনিশ্চয় (নির্ণয়) করা যেতে পারে। পাল বংশের পরে আসে সেন বংশ। সেন বংশ হিন্দুধর্ম এবং ব্রাহ্মণ্যসংস্কার রাজধর্ম হিসাবে গ্রহণ করে। ফলে বৌদ্ধ সিদ্ধচার্যেরা এদেশ হতে বিতাড়িত হয় এবং নেপালে আশ্রয় গ্রহণ করে। তাই বাংলা সাহিত্যের আদি নিদর্শন। বাংলাদেশের বাহিরে নেপালে পাওয়া গেছে।

চর্যাপদের ভাষা:

চর্যাপদের শব্দগুলো অপরিচিত, শব্দ ব্যবহারের রীতি বর্তমানের রীতি থেকে ভিন্ন- তাই এর কবিতাগুলো পড়ে বুঝতে কষ্ট হয়। চর্যাপদের ভাষাকে ‘সন্ধ্যা ভাষা বা সান্ধ্য ভাষা’ বলা হয়। সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় তাঁর ‘বাঙলা ভাষার উৎপত্তি ও বিকাশ’ (The Origin and Development of the Bengali language) নামক গ্রন্থে ধ্বনিতত্ত্ব ব্যাকরণ ও ছন্দ বিচার করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন যে, পদসংকলনটি আদি বাংলা ভাষায় রচিত। আধুনিক ছন্দের বিচারে চর্যাপদের ছন্দকে মাত্রাবৃত্ত ছন্দ বলা যায়। ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ সম্পাদিত ‘চর্যাপদ’ বিষয়ক গ্রন্থের নাম ‘Buddhist Mystic Songs’। তাঁর মতে, চর্যাপদের ভাষা বঙ্গ-কামরূপী। সেকালের বাংলা, উড়িয়া বা অসমিয়া ভাষার পার্থক্য ছিল সামান্যই। তাই এই ভাষাগুলোকে বাংলার সহোদর ভাষাগোষ্ঠী বলা হয়। উল্লেখ্য যে, চর্যাপদ উড়িষ্যা, বিহার,

পৃষ্ঠা ৯

আসাম, পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের নিজ নিজ ভাষা ও সাহিত্যের আদি নিদর্শন হিসাবে বিবেচিত। মুনিদত্ত চর্যাপদের পদগুলোকে টীকার মাধ্যমে ব্যাখ্যা করেন।

চর্যাপদের পদসংখ্যা:

চর্যাপদের পদ সংখ্যা নিয়ে মতভেদ আছে। কয়েক পাতা চর্যাপদের পদসংখ্যা নষ্ট হয়ে যাওয়ায় সর্বমোট সাড়ে ৪৬টি পদ পাওয়া গেছে। ২৩ নং পদটি খণ্ডিত আকারে উদ্ধার করা হয়েছে অর্থাৎ এর শেষাংশ পাওয়া যায়নি। ২৪, ২৫ ও ৪৮ নং পদগুলো পাওয়া যায়নি।

চর্যাপদের পদসংখ্যা: ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহর মতে; ৫০টি।

চর্যাপদের পদসংখ্যা: সুকুমার সেনের মতে; ৫১টি।

চিত্র: চর্যাপদ।

চর্যাপদের পদকর্তা:

ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ’র মতে; ২৩ জন।

সুকুমার সেনের মতে; ২৪ জন।

চর্যাপদের মোট পদকর্তা ২৪ জন। ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ’র মতে- চর্যাপদের প্রাচীন কবি শবরপা এবং আধুনিকতম কবি সরহ বা ভুসুকু। ভুসুকুপা নিজেকে বাঙালি বলে পরিচয় দিয়েছেন। লুই, শবর, ককুরী, বিরুআ, গুণ্ডরী, চাটিল, ভুসুকু, কাহ্ন, কামলি, ডোম্বী, শান্তি, মহিত্তা, বীণা, সরহ, আজদেব, ঢেণ্ডণ, দারিক, ভাদে, তাড়ক, কঙ্কণ, জঅনন্দি, ধাম, তন্ত্রী ও লাড়ীডোম্বী। পদকর্তাদের নামের শেষে সম্মানসূচক ‘পা’ যোগ করা হয়। যেমন: লুই থেকে লুইপা, শবর থেকে শবরপা।

চর্যাপদ তথা বাংলা সাহিত্যের আদি কবি:

ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ’র মতে: শবরপা।

ড. হরপ্রসাদশাস্ত্রীসহ অধিকাংশের মতে: লুইপা।

পৃষ্ঠা ১০

পদকর্তা: কাহ্নপা, রচিত পদের সংখ্যা; ১৩টি।

পদকর্তা: ভুসুকুপা, রচিত পদের সংখ্যা; ৮টি।

পদকর্তা: সরহপা, রচিত পদের সংখ্যা; ৪টি।

পদকর্তা: লুইপা, রচিত পদের সংখ্যা; ২টি।

পদকর্তা: শান্তিপা, রচিত পদের সংখ্যা; ২টি।

পদকর্তা: কবরীপা, রচিত পদের সংখ্যা; ২টি।

পদকর্তা: অবশিষ্টরা, রচিত পদের সংখ্যা; প্রত্যেকে ১টি করে।

পদকর্তা: লাড়ীডোম্বীপা, রচিত পদের সংখ্যা; কোনো পদ পাওয়া যায়নি।

চর্যাপদের রচনাকাল:

ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ’র মতে: ৬৫০ খ্রিষ্টাব্দ।

ড. সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়সহ অধিকাংশের মতে: ৯৫০ থেকে ১২০০ খ্রিষ্টাব্দ।

চর্যাপদের বয়স:

ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ’র মতে, (২০১৮ থেকে ৬৫০) বছর= ১৩৬৮ বছর (প্রায়)।

ড. সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়সহ অধিকাংশের মতে, যেহেতু এখন ২০১৮ সাল (২০১৮ থেকে ৯৫০) বছর= ১০৬৮ বছর (প্রায়)।

চর্যাপদের নিদর্শন:

(১) ‘আলি এঁ কালি এঁ বাট রুন্ধেলা। তা দেখি কাহ্ন বিমনা ভইলা।’ (রচয়িতা: কাহ্নপা)

(২) ‘টালত মোর ঘর নাহি পড়বেশী, হাড়ীত ভাত নাহি নিতি আবেশী। (রচয়িতা: ঢেণ্ডণপা)

চর্যাপদের ৩৩ নং পদের এ পঙক্তি দু’টিতে ‘দারিদ্রক্লিষ্ট জীবনের চিত্র ফুটে উঠেছে। ‘আপনা মাংসে হরিণা বৈরী’। (রচয়িতা: ভুসুকুপা)।

(৩) চঞ্চল চীএ পইঠা কাল’ (রচয়িতা: লুইপা) [‘অভিসময়বিভঙ্গ’ গ্রন্থের রচয়িতা: লুইপা।]

(৪) ‘কমল মধু পিবিবি ধোকইন ভোমরা’ (রচয়িতা: মৎস্যেন্দ্রনাথ বা মীননাথ)। তার চর্যাপদে কোনো পদ নেই। তবে ২১ সংখ্যক পদের টীকায় কেবল চারটি পঙক্তির উল্লেখ আছে।

MCQ Solution

১. বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের প্রাচীনতম শাখা কোনটি?

উত্তর: কাব্য

২. বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের প্রাচীন নিদর্শন কোনটি?

উত্তর: চর্যাপদ

৩. বাংলা ভাষার প্রথম কবিতা সংকলন?

উত্তর: চর্যাপদ

পৃষ্ঠা ১১

৪. ‘চর্যাপদ’ রচনাটি বাংলা সাহিত্যের কোন যুগের কাব্য নিদর্শন?

উত্তর: আদিযুগ

৫. চর্যাপদ হলো মূলত?

উত্তর: গানের সংকলন

৬. চর্যাপদ হলো?

উত্তর: সাধন সংগীত

৭. চর্যাপদের সঙ্গে কোন ধর্মের নাম সংশ্লিষ্ট?

উত্তর: বৌদ্ধধর্ম

৮. ‘চর্যাপদ’ কোন ধর্মাবলম্বীদের সাহিত্য?

উত্তর: সহজিয়া বৌদ্ধ

৯. কোন রাজবংশের আমলে চর্যাপদ রচনা শুরু হয়?

উত্তর: পাল

১০. ‘চর্যাচর্যবিনিশ্চয়’- এর অর্থ কী?

উত্তর: কোনটি আচরণীয়, আর কোনটি নয়।

১১. বাংলা ভাষার আদি নিদর্শন চর্যাপদ আবিষ্কৃত হয় কত সালে?

উত্তর: ১৯০৭ সালে

১২. চর্যাপদ আবিষ্কৃত হয় কোথা থেকে?

উত্তর: নেপালের রাজগ্রন্থশালা থেকে

১৩. বাংলা ভাষার প্রথম কাব্য সংকলন ‘চর্যাপদ’ এর আবিষ্কারক?

উত্তর: ডক্টর হরপ্রসাদ শাস্ত্রী

১৪. হরপ্রসাদ শাস্ত্রী পুঁথি সাহিত্য সংগ্রহের জন্য গিয়েছিলেন?

উত্তর: তিব্বত, নেপাল

পৃষ্ঠা ১২

১৫. ‘চর্যাপদ’ প্রথম কোথা থেকে প্রকাশিত হয়?

উত্তর: বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ

১৬. বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ কর্তৃক প্রকাশিত ‘চর্যাপদ’ কে সম্পাদনা করেন?

উত্তর: শ্রী হরপ্রসাদ শাস্ত্রী

১৭. হরপ্রসাদশাস্ত্রী চর্যাপদ’ যেগ্রন্থেপ্রকাশকরেছিলেন তার নাম হল?

উত্তর: হাজার বছরের পুরাণ বাঙ্গালা ভাষায় বৌদ্ধগান ও দোহা

১৮. বাংলা সাহিত্যের প্রাচীন যুগের নিদর্শন কোনটি?

উত্তর: দোহাকোষ

১৯. ‘সন্ধ্যাভাষা’ কোন সাহিত্যকর্মের সঙ্গে যুক্ত?

উত্তর: চর্যাপদ

২০. চর্যাপদ যে বাংলা ভাষায় রচিত এটি প্রথম কে প্রমাণ করেন?

উত্তর: সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়

২১. ‘The Orgin and Development of the Bengali Language’ গ্রন্থটি রচনা করেছেন?

উত্তর: ড. সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়

২২. চর্যাপদ কোন ছন্দে লেখা?

উত্তর: মাত্রাবৃত্ত

২৩. ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ সম্পাদিত ‘চর্যাপদ’ বিষয়ক গ্রন্থের নাম কী?

উত্তর: Buddhist Mystic Songs

২৪. ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ’র মতে, চর্যাপদের ভাষা?

উত্তর: বঙ্গ-কামরূপী

২৫. নিচের কোনটি সহোদর ভাষাগোষ্ঠী?

উত্তর: বাংলা ও অসমিয়া

পৃষ্ঠা ১৩

২৬. কোন পণ্ডিত চর্যাপদের পদগুলোকে টীকার মাধ্যমে ব্যাখ্যা করেন?

উত্তর: মুনিদত্ত

২৭. বাংলা সাহিত্যের আদিগ্রন্থ ‘চর্যাপদ’ এর রচনাকাল?

উত্তর: সপ্তম থেকে দ্বাদশ শতক

২৮. চর্যাপদের বয়স আনুমানিক কত বছর?

উত্তর: ১০০০ বছর

২৯. বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস ও ইংরেজি সাহিত্যের ইতিহাস?

উত্তর: ইংরেজি সাহিত্যের ইতিহাস

ব্যাখ্যা: বাংলা সাহিত্যের প্রাচীনতম নিদর্শন ‘চর্যাপদ’ এর রচনাকাল ৬৫০ খ্রিষ্টাব্দ (ড, মুহম্মদ শহীদুল্লাহ’র মতে)। ইংরেজি সাহিত্যের প্রথম সাহিত্যকর্ম ‘Beowulf’ এর রচনাকাল ৪৫০ খ্রিষ্টাব্দ।

৩০. প্রাপ্ত চর্যাপদের পদকর্তা কতজন?

উত্তর: ২৩

৩১. চর্যাপদে কতজন কবির পদ রয়েছে?

উত্তর: ২৪ জন

৩২. বাংলা সাহিত্যের আদি কবি কে?

অথবা, চর্যাপদের আদি কবি কে?

উত্তর: লুইপা

৩৩. হরপ্রসাদশাস্ত্রী কাকে চর্যার আদি কবি মনে করেন?

উত্তর: লুইপা

৩৪. ‘কাহ্নপা’ কী ধরনের সাহিত্য রচনা করেছেন?

উত্তর: চর্যাপদ

৩৫. সবচেয়ে বেশি চর্যাপদ পাওয়া গেছে কোন কবির?

উত্তর: কাহ্নপা

পৃষ্ঠা ১৪

৩৬. চর্যাগীতি রচনার সংখ্যাধিক্যের দ্বিতীয় স্থানের অধিকারী কে?

উত্তর: ভুসুকুপা

৩৭. কোন কবি নিজেকে বাঙালি বলে পরিচয় দিয়েছেন?

উত্তর: ভুসুকুপা

৩৮. শবরপা কে ছিলেন?

উত্তর: চর্যাকর

৩৯. চর্যাপদের গান সংখ্যা কতগুলো?

উত্তর: ৫১টি

৪০. বাংলা সাহিত্যের প্রথম নিদর্শন চর্যাপদের সংখ্যা?

উত্তর: ৫০টি

৪১. চর্যাপদের কোন পদটি খণ্ডিত আকারে পাওয়া যায়?

উত্তর: ২৩ নং পদ

৪২. ‘আপনা মাংসে হরিণা বৈরী’ লাইনটি কোন সাহিত্যের অন্তর্ভুক্ত?

উত্তর: চর্যাপদ

৪৩. কমল মধু পিবিবি ধোকইন ভোমরা কোন ভাষার নিদর্শন?

উত্তর: সান্ধ্য

৪৪. ‘চঞ্চল চীএ পইঠা কাল’ কোন কবির চর্যাংশ?

উত্তর: লুইপা

৪৫. ‘অভিসময়বিভঙ্গ’ কার রচনা?

উত্তর: লুইপা

৪৬. নিচের পঙক্তিটি কার রচনা?

‘আলি এঁ কালি এঁ বাট রুন্ধেলা। তা দেখি কাহ্ন বিমনা ভইলা।’-

উত্তর: কাহ্নপা

পৃষ্ঠা ১৫

৪৭. ‘টালত মোর ঘর নাহি পড়বেশী, হাড়ীত ভাত নাহি নিতি আবেশী’।- চর্যাপদের এ চরণ দুটিতে কি বোঝানো হয়েছে?

উত্তর: দারিদ্রক্লিষ্ট জীবনের চিত্র

ডাক ও খনার বচন:

ডাক ও খনার বচনকে বাংলা সাহিত্যের আদিযুগের সৃষ্টি বলে বিবেচনা করা হয়। তবে এর কোনো লিখিত নিদর্শন বর্তমান নেই। মুখে মুখে প্রচলিত ছড়া জাতীয় এ নমুনাকে লোকসাহিত্যের আদি নিদর্শন হিসাবে বিবেচনা করা হয়।

ডাকের বচন: জ্যোতিষ ক্ষেত্রতত্ত্ব ও মানব চরিত্রের ব্যাখ্যা প্রাধান্য পেয়েছে।

খনার বচন: কৃষি ও আবহাওয়ার কথা প্রাধান্য পেয়েছে।

MCQ Solution

১. মধ্যযুগের কোন সাহিত্য কৃষিকাজের জন্য উপযোগী?

উত্তর: ডাক ও খনার বচন

২. ‘খনার বচন’ কি সংক্রান্ত?

উত্তর: কৃষি

বাংলা লিপি (Bengali script):

ব্রাহ্মী লিপি ভারতের মৌলিক লিপি। সকল ভারতীয় লিপিই এই ব্রাহ্মী লিপি থেকে জন্মলাভ করেছে। ব্রাহ্মী লিপির কুটিল রূপ হতে বাংলা লিপি ও বর্ণমালার উদ্ভব হয়। শুধু বাংলা নয় সিংহলী, ব্রক্ষ্মী, শ্যামী, যবদ্বীপী ও তিব্বতি লিপির উৎসও ব্রাহ্মী লিপি। অষ্টম শতাব্দীতে ব্রাহ্মী লিপি থেকে পশ্চিমা লিপি, মধ্যভারতীয় লিপি ও পূর্বী লিপি-এই তিনটি শাখার সৃষ্টি হয়। পূর্বী লিপি থেকেই বাংলা লিপির জন্ম হয়েছে।

সেন যুগে বাংলা লিপির গঠনকার্য শুরু হলেও পাঠান যুগে তার মোটামুটি স্থায়ী আকার লাভ করে। ১৮০০ খ্রিষ্টাব্দে শ্রীরামপুর মিশন প্রেস স্থাপিত হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত সুদীর্ঘ সময়ে হাতে লেখা হয়েছে বলে বাংলা লিপি নানা পরিবর্তনের মাধ্যমে অগ্রসর হয়েছে। ছাপাখানার প্রভাবে বাংলা লিপি স্থায়ী রূপ লাভ করে এবং পরবর্তীকালে বাংলা লিপির আর তেমন কোন পরিবর্তন ঘটেনি। ব্রাহ্মী লিপিমালা বাম দিক থেকে লেখা হতো কিন্তু খরোষ্ঠী লিপিমালা ডানদিক থেকে লেখা হতো।

পৃষ্ঠা ১৬

ভারতীয় লিপিমালা দুই প্রকার। যথা- (১) ব্রাহ্মী লিপি, (২) খরোষ্ঠী লিপি।

ব্রাহ্মী লিপি তিন প্রকার। যথা- (১) পশ্চিমা লিপি (২) মধ্য ভারতীয় লিপি (৩) পূর্বী লিপি।

পূর্বী লিপি হলো বাংলা লিপি ও বর্ণমালা।

MCQ Solution

১. ভারতীয় মৌলিক লিপি কোনটি?

উত্তর: ব্রাহ্মী

২. বাংলা লিপির উৎস কি?

উত্তর: ব্রাহ্মী লিপি

৩. ভারতীয় কোন লিপিমালা ডানদিক থেকে লেখা হয়?

উত্তর: খরোষ্ঠী

৪. কোন যুগে বাংলা লিপি ও অক্ষরের গঠনকার্য শুরু হয়?

উত্তর: সেন যুগ

৫. কোন শাসনামলে বাংলা লিপির স্থায়ী রূপ তৈরি করে অক্ষর গঠনের কাজ শুরু হয়?

উত্তর: পাঠান যুগ

পৃষ্ঠা ১৭

মধ্যযুগ

মধ্যযুগের শ্রেণিবিভাগ:

বাংলা সাহিত্যের মধ্যযুগ ১২০১ থেকে ১৮০০ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত বিস্তৃত। ১২০৪ খ্রিষ্টাব্দে বাংলাদেশে প্রথম মুসলমান শাসনের সূত্রপাত এবং ১৭৫৭ সালে পলাশীর যুদ্ধে ইংরেজদের বিজয়ে তার অবসান। তাই বাংলা সাহিত্যের মধ্যযুগের সবটুকুই মুসলিম শাসনামলের অন্তর্গত।

মধ্যযুগ তিন ভাগে বিভক্ত। যথা- (১) তুর্কি যুগ (১২০১ থেকে ১৩৫০ খ্রি.), (২) সুলতানি যুগ (১৩৫১ থেকে ১৫৭৫ খ্রি.) (৩) মোগল যুগ (১৫৭৬ থেকে ১৭৫৭ খ্রি.)।

(১) তুর্কি যুগ (১২০১ থেকে ১৩৫০ খ্রি.):

বাংলা সাহিত্যে মধ্যযুগের শুরুতেই ১২০১ থেকে ১৩৫০ খিস্টাব্দ পর্যন্ত সময়কে তথাকথিত ‘অন্ধকার যুগ’ বলে একটি বিতর্কিত বিষয়ের অবতারণা করা হয়েছে। তুর্কি শাসকদের সময়কে বাংলা সাহিত্যের অন্ধকার যুগ বলা হয়। তুর্কি যুগকে প্রধানত ভাষা গঠনের যুগ ছিল বলে মনে করা হয়। অন্ধকার যুগের সাহিত্য সৃষ্টির কোনো নিদর্শন পাওয়া যায় নি এ কথাও সত্য নয়। এ সময়ে বাংলা সাহিত্যের ব্যাপক নিদর্শন পাওয়া না গেলেও অন্যান্য ভাষায় সাহিত্য সৃষ্টির নিদর্শন বর্তমান থাকাতে অন্ধকার যুগের অপবাদের অসারতা প্রমাণিত হয়। অন্য ভাষায় রচিত এ সময়ের উল্লেখয়োগ্য গ্রন্থ-

শূন্যপুরাণ: রামাই পণ্ডিত রচিত ধর্মপূজার শাস্ত্রগ্রন্থ। “শূন্যপুরাণ’ গদ্য-পদ্য মিশ্রিত চম্পুকাব্য। ‘নিরঞ্জনের রুম্মা’ শূন্যপুরাণ কাব্যের অংশ বিশেষ।

সেক শুভোদয়া: রাজা লক্ষণ সেনের সভাকবি হলায়ুধ মিশ্র রচিত ‘সেক শুভোদয়া’ সংস্কৃত গদ্যপদ্যে লেখা চম্পুকাব্য।

(২) সুলতানি যুগ (১৩৫১ থেকে ১৫৭৫ খ্রি.):

পাঠান সুলতানগণ মধ্যযুগে বাংলা সাহিত্যের পৃষ্ঠপোষকতায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। এই সময়ে গৌড়ীয় শাহী দরবার বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের সাংস্কৃতিক স্নায়ুকেন্দ্র রূপে গড়ে ওঠে। গৌড়কে কেন্দ্র করে এই সময়ে বাংলা সাহিত্যের বিকাশের গুরুত্ব বিবেচনা করে ড. দীনেশচন্দ্র সেন এই আমলকে ‘গৌড়ীয় যুগ’ও বলে অভিহিত করেন। এসময় রুকনউদ্দীন বারবক শাহ এর পৃষ্ঠপোষকতায় জৈনুদ্দীন ‘রসুলবিজয়’ কাব্য এবং আলাউদ্দীন হোসেন শাহের পৃষ্ঠপোষকতায় বিপ্রদাস পিপিলাই ‘মনসাবিজয়’ কাব্য রচনা করেন।

(৩) মোগল যুগ (১৫৭৬ থেকে ১৭৫৭ খ্রি.):

আরাকান রাজসভার পৃষ্ঠপোষকতায় মুসলমান কবিগণ প্রণয়কাব্য রচনা করে বাংলা সাহিত্যে স্বতন্ত্র ধারার প্রবর্তন করেন।

পৃষ্ঠা ১৮

MCQ Solution

১. কোন সময়কে বাংলা সাহিত্যের ‘অন্ধকার যুগ বলা হয়?

উত্তর: ১২০১ থেকে ১৩৫০ খ্রি.

২. কোন শাসকদের সময়কে বাংলা সাহিত্যের অন্ধকার যুগ বলা হয়?

উত্তর: তুর্কি

৩. ‘শূন্যপুরাণ’ কাব্য কার রচনা?

উত্তর: রামাই পণ্ডিত

৪. ‘শূন্যপুরাণ এবং ডাক ও খনার বচন’- এই গ্রন্থদুটির রচয়িতা কে?

উত্তর: রামাই পণ্ডিত

৫. মধ্যযুগে বাংলা সাহিত্যের পৃষ্ঠপোষকতায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন?

উত্তর: পাঠান সুলতানগণ

৬. ‘রসুলবিজয়’ কাব্যের রচয়িতা কে?

উত্তর:

ব্যাখ্যা: সঠিক উত্তর- জৈনুদ্দীন।

৭. বাংলা সাহিত্যের পৃষ্ঠপোষকতার জন্য বিখ্যাত শাসক?

উত্তর: আলাউদ্দিন হুসাইন শাহ

৮. আলাউদ্দীন হোসেন শাহ বাংলা সাহিত্যে কী কারণে খ্যাতিমান?

উত্তর: অনুবাদের পৃষ্ঠপোষকতার জন্য

৯. বিপ্রদাস পিপিলাই রচিত কাব্যের নাম কি?

উত্তর: মনসাবিজয়

পৃষ্ঠা ১৯

শ্রীকৃষ্ণকীর্তন:

‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’ মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যের প্রথম ও শ্রেষ্ঠ নিদর্শন। এটি সর্বজন স্বীকৃত ও খাঁটি বাংলা ভাষায় রচিত প্রথম কাব্যগ্রন্থ। কাব্য পুঁথিটির রচয়িতা বড়ু চণ্ডীদাস (ছদ্মনাম- অনন্ত বড়)। বড়ু চণ্ডীদাস মধ্যযুগের আদি বা প্রথম কবি। কাব্যটি বাংলা ভাষায় রচিত কোনো লেখকের প্রথম একক গ্রন্থ। কবি চতুর্দশ শতাব্দীর শেষ দিকে কাব্যটি রচনা করেন। পুঁথিতে প্রাপ্ত একটি চিরকুট অনুসারে এই কাব্যের প্রকৃত নাম ‘শ্রীকৃষ্ণসন্দর্ভ’। ১৯০৯ সালে ‘বসন্তরঞ্জন রায় বিদ্বদ্বল্লভ’ ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়া জেলার কাকিল্যা গ্রামের এক গৃহস্থ বাড়ির গোয়ালঘর হতে পুঁথিটি উদ্ধার করেন। ১৯১৬ সালে বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ থেকে বসন্তরঞ্জন রায়ের সম্পাদনায় কাব্যগ্রন্থটি প্রকাশিত হয়। ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্যের প্রধান চরিত্র রাধা (জীবাত্মা বা প্রাণিকূল), কৃষ্ণ (পরমাত্মা বা ঈশ্বর) ও বড়াই (প্রেমের দূতী)। কাব্যটিতে মোট ১৩টি খণ্ড রয়েছে। প্রধানত শ্ৰীকৃষ্ণ, শ্রীরাধা ও বড়ায়ির পরস্পর উত্তর-প্রত্যুত্তরের মধ্যদিয়ে শ্রীকৃষ্ণকীর্তনের বিভিন্ন খণ্ডে এক-একটি কাহিনী বর্ণিত হয়েছে। উল্লিখিত বৈশিষ্ট্যের জন্য শ্রীকৃষ্ণকীর্তন পাঁচালী করে না গেয়ে নাটগীত হিসেবে নৃত্য ও অভিনয়ের সঙ্গে গাওয়া যেত। পুঁথিটিকে তাই ‘ঝুমুর জাতীয় লৌকিক নাটগীতের প্রাচীনতম নিদর্শন হিসেবে অভিহিত করা যায়।

MCQ Solution

১. মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যের প্রথম নিদর্শন কোনটি?

উত্তর: শ্রীকৃষ্ণকীর্তন

২. মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যের শ্রেষ্ঠ নিদর্শন কোনটি?

উত্তর: শ্রীকৃষ্ণকীর্তন

৩. সর্বজন স্বীকৃত ও খাটি বাংলা ভাষায় রচিত প্রথম কাব্যগ্রন্থ কোনটি?

উত্তর: শ্রীকৃষ্ণকীর্তন

৪. মধ্যযুগের প্রথম কাব্য কোনটি?

উত্তর: শ্রীকৃষ্ণকীর্তন

৫. ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’ কোন যুগের বাংলা সাহিত্যের নিদর্শন?

উত্তর: মধ্যযুগ

৬. ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’ কাব্যের রচয়িতা?

উত্তর: বড়ু চণ্ডীদাস

৭. মধ্যযুগের প্রথম কবি হচ্ছে?

উত্তর: বড় চণ্ডীদাস

পৃষ্ঠা ২০

৮. ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’ আবিষ্কার করেন?

উত্তর: বসন্তরঞ্জন রায়

৯. শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্যটি আবিষ্কৃত হয়?

উত্তর: ১৯০৯

১০. শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্যখানি আবিষ্কৃত হয় কোথায়?

উত্তর: গোয়ালঘরে

১১. শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্যের খণ্ড সংখ্যা?

উত্তর: ১৩

১২. গঠনরীতিতে ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’ কাব্য মূলত?

উত্তর: নাটগীতি

১৩. ‘বড়াই’ কোন কাব্যের চরিত্র?

উত্তর: শ্রীকৃষ্ণকীর্তন

১৪. শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্যের ‘বড়াই’ কি ধরনের চরিত্র?

উত্তর: রাধাকৃষ্ণের প্রেমের দূতী

মধ্যযুগের সাহিত্যের ধারা:

মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যের সমগ্র সৃষ্টিকে দুই শ্রেণিতে বিভক্ত করা যায়। যেমন: মৌলিক রচনা ও অনুবাদ রচনা।

মৌলিক সাহিত্য ছয় প্রকার। যথা-(১) বৈষ্ণব পদাবলি (২) জীবনী সাহিত্য, (৩) মঙ্গলকাব্য, (৪) লোকসাহিত্য, (৫) নাথসাহিত্য, (৬) মর্সিয়া।

অনুবাদ সাহিত্য দুই প্রকার। যথা- (১) আরবি-ফারসি-হিন্দি ভাষা থেকে, (২)সংস্কৃত থেকে।

পৃষ্ঠা ২১

মৌলিক সাহিত্য:

(ক) পদ বা পদাবলি মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যের শ্রেষ্ঠ রচনা ‘বৈষ্ণব পদাবলি’। বৌদ্ধ বা বৈষ্ণবীয় ধর্মের গূঢ় বিষয়ের বিশেষ সৃষ্টি পদ বা পদাবলি। পদাবলি সাহিত্য বৈষ্ণবতত্ত্বের রসভাস্য। বৈষ্ণব গীতিতে পাঁচটি রসের উল্লেখ পাওয়া যায়। যথা- শান্ত, দাস্য, সখ্য, বাৎসল্য এবং মধুর। বৈষ্ণবদের উপাস্য ভগবান শ্রীকৃষ্ণ। তাঁর আনন্দময় তথা প্রেমময় প্রকাশ ঘটেছে রাধার মাধ্যমে। বৈষ্ণব পদাবলি’ রাধা ও কৃষ্ণের আকর্ষণবিকর্ষণের বিচিত্র অনুভূতি সম্বলিত এক প্রকার গান।

তাই রাধাকৃষ্ণ প্রেম-লীলার মাধুর্য পদাবলির গানের উপজীব্য হয়েছিল। শ্রীকৃষ্ণের ও তার প্রেয়সীভাবাপন্ন ভক্তদের যে মধুর সম্বন্ধ এবং এই প্রিয় সম্বন্ধজনিত পরস্পরের মধ্যে যে সম্ভোগ ভাব তার নাম মধুর রস। বৈষ্ণব সমাজে বৈষ্ণব পদাবলি ‘মহাজন পদাবলি’ এবং বৈষ্ণব পদকর্তাগণ ‘মহাজন’ নামে পরিচিত ছিল। পদাবলির আদি কবি বিদ্যাপতি। তিনি ব্রজবুলি ভাষায় পদগুলো রচনা করেন। বাংলা ভাষায় বৈষ্ণব পদাবলির আদি রচয়িতা বড়ু চণ্ডীদাস। জ্ঞানদাস, গোবিন্দদাস, লোচনদাস, বলরামদাসের নামও বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। আধুনিকযুগের কবিদের মধ্যে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।

জয়দেব: (বার’শ শতক) সংস্কৃত কবি। তাঁর বিখ্যাত রচনা ‘গীতগোবিন্দম্’। এটি সংস্কৃত গীতিকাব্য। রাধাকৃষ্ণের প্রেমলীলা এর মুখ্য বিষয়। পরবর্তীকালে বাংলা পদাবলি সাহিত্যে এর গভীর প্রভাব পড়েছে।

বিদ্যাপতি: মিথিলার কবি বা মৈথিল কোকিল বিদ্যাপতি বৈষ্ণব পদাবলির গুরুস্থানীয় রচয়িতা। তার উপাধি হলো কবিকণ্ঠহার। বাঙালি না হয়েও তিনি বাংলা সাহিত্যে স্বাতন্ত্র্য স্থানের অধিকারী। একটি বাংলা পঙক্তি না লিখেও বাংলা সাহিত্যে তাঁকে অত্যন্ত মর্যাদাবান কবি বলা হয়। বিদ্যাপতির অমর উক্তি-

এ সখি হামারি দুখের নাহি ওর।

এ ভরা বাদর মাহ ভাদর

শূন্য মন্দির মোর।

ব্রজবুলি ভাষা: ব্রজবুলি মূলত মৈথিলি ও বাংলা মিশ্রণে এক মধুর সাহিত্যিক ভাষা। মিথিলার কবি বিদ্যাপতি এ ভাষার স্রষ্টা। বৈষ্ণব পদাবলির অধিকাংশই রচিত হয়েছে ‘ব্রজবুলি’ নামক একটি কৃত্রিম মিশ্র ভাষায়। এতে কিছু হিন্দি শব্দও আছে। ব্রজলীলা সম্পর্কিত পদাবলির ভাষা- ‘ব্রজবুলি’ নামে পরিচিত। ‘ব্রজবুলি’ কখনও মানুষের মুখের ভাষা ছিল না; সাহিত্যকর্ম ব্যতীত অন্যত্র এর ব্যবহারও নেই।

চণ্ডীদাস: মধ্যযুগের একাধিক কবি নিজেকে চণ্ডীদাস দাবি করলে সমস্যার সৃষ্টি হয়। ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহর মতে, চণ্ডীদাস তিন জন; বড় চণ্ডীদাস, দ্বিজ চণ্ডীদাস ও দীন চণ্ডীদাস। তাদের মধ্যে বড় চণ্ডীদাস সবচেয়ে প্রাচীন। চণ্ডীদাসের অমর উক্তি-

(১) সবার উপর মানুষ সত্য, তাহার উপর নাই।

(২) সই কে শুনাইল শ্যাম নাম।

(৩) সই কেমনে ধরিব

হিয়ার আমার বঁধূয়া আন বাড়ি যায়

আমার আঙিনা দিয়া।

(৪) দুহু কোরে দুহু কাঁদে বিচ্ছেদ ভাবিয়া।

আধ তিল না দেখিলে যায় যে মরিয়া।

পৃষ্ঠা ২২

জ্ঞানদাস: সম্ভবত ষোড়শ শতাব্দীতে বর্ধমান জেলায় কবি জ্ঞানদাসের জন্ম। তিনি চণ্ডীদাসের ভাবশিষ্য ছিলেন। চণ্ডীদাস ও জ্ঞানদাসের পদের মধ্যে যথেষ্ট সাদৃশ্য আছে। জ্ঞানদাস ছিলেন শিল্পী এবং চণ্ডীদাস ছিলেন সাধক। জ্ঞানদাসের বিখ্যাত পঙক্তি-

(১) রূপ লাগি আঁখি ঝুরে গুণে মন ভোর।

(২) সুখের লাগিয়ে এ ঘর বান্ধিলু আনলে পুড়িয়া গেল।

গোবিন্দদাস: তিনি ছিলেন বৈষ্ণব পদকর্তা। তাঁকে বিদ্যাপতির ভাবশিষ্য বলা হয়।

MCQ Solution

১. পদ বা পদাবলি বলতে কি বুঝায়?

উত্তর: বৌদ্ধ বা বৈষ্ণবীয় ধর্মের গৃঢ় বিষয়ের বিশেষ সৃষ্টির

২. কোন উক্তিটি ঠিক?

উত্তর: বৈষ্ণব পদাবলি রাধা ও কৃষ্ণের আকর্ষণ-বিকর্ষণের বিচিত্র অনুভূতি সম্বলিত এক প্রকার গান

৩. শৃঙ্গার রসকে বৈষ্ণব পদাবলিতে কী রস বলে?

উত্তর: মধুর রস

৪. পদাবলির প্রথম কবি কে?

উত্তর: বিদ্যাপতি

৫. বাংলা ভাষায় বৈষ্ণব পদাবলির আদি রচয়িতা কে?

উত্তর: চণ্ডীদাস

৬. ‘বিদ্যাপতি’ কোন রাজসভার কবি ছিলেন?

উত্তর: মিথিলা

৭. বৈষ্ণব পদাবলির অবাঙালি কবি কে?

উত্তর: বিদ্যাপতি

৮. কোন কবি বাঙালি না হয়েও বাংলা সাহিত্যে স্বতন্ত্র স্থান দখল করে আছেন?

উত্তর: বিদ্যাপতি

পৃষ্ঠা ২৩

৯. বিদ্যাপতি কোন ধারার কবি?

উত্তর: বৈষ্ণব পদাবলি

১০. বিদ্যাপতি কোন ভাষায় পদ রচনা করেন?

উত্তর: ব্রজবুলি

১১. ‘ব্রজবুলি’ বলতে কী বোঝায়?

উত্তর: এক রকম কৃত্রিম কবিভাষা

১২. বাংলা এবং মৈথিলী ভাষার সমন্বয়ে যে ভাষার সৃষ্টি হয়েছে, তার নাম কি?

উত্তর: ব্রজবুলি

১৩. ব্রজভাষা কি?

উত্তর: মিথিলা ও বাংলার মিশ্র ভাষা

১৪. ব্রজবুলি’র কোন স্থানের ভাষা?

উত্তর: মিথিলা

১৫. ‘ব্রজবুলি’র প্রবর্তক কে?

উত্তর: বিদ্যাপতি

১৬. ‘ব্রজবুলি’তে কোন কবি পদাবলি রচনা করেন?

উত্তর: বিদ্যাপতি

১৭. কাকে বিদ্যাপতির ভাবশিষ্য বলা হয়?

উত্তর: গোবিন্দদাস

১৮. গীতগোবিন্দ কোন ভাষায় রচিত?

উত্তর: সংস্কৃত ব্রজবুলি

১৯. ‘এ ভরা বাদর মাহ ভাদর/ শূন্য মন্দির মোর’- কে লিখেছেন?

উত্তর: বিদ্যাপতি

পৃষ্ঠা ২৪

২০. বৈষ্ণব পদকর্তা দাস’ কত জন?

উত্তর: ৩ জন

২১. বর উপরে মানুষ সত্য, তাহার উপর নাই’- কে বলেছেন?

উত্তর: চণ্ডীদাস

২২. ‘সই কে শুনাইল শ্যাম না’ পদটির রচয়িতা কে?

উত্তর: চণ্ডীদাস

২৩. “সই কেমনে ধরিব হিয়া/ আমার বঁধূয়া আন বাড়ি যায়। আমরি আঙিনা দিয়া।” কার রচনা?

উত্তর: চণ্ডীদাস

২৪. নিচের কোন জন বাংলা ভাষার কবি?

উত্তর: জ্ঞানদাস

২৫. ‘সুখের লাগিয়ে এ ঘর বান্ধিলু আনলে পুড়িয়া গেল’-

উত্তর: জ্ঞানদাস

২৬. কে বাংলা ভাষার কবি নন?

উত্তর: জয়দেব

২৭. মধ্যযুগের কবি নন কে?

উত্তর: জয়নন্দী

ব্যাখ্যা: জয়নন্দী চর্যাপদ বা প্রাচীন যুগের কবি। তিনি চর্যাপদের ৪৬ নং পদের রচয়িতা।

(খ) মঙ্গলকাব্য:

বাংলা সাহিত্যের মধ্যযুগে বিশেষ একশ্রেণির ধর্মবিষয়ক আখ্যান কাব্য হলো ‘মঙ্গলকাব্য’। ‘মঙ্গল’ শব্দটির আভিধানিক অর্থ ‘কল্যাণ’। মঙ্গলকাব্য রচনার মূল কারণ স্বপ্নদেবী কর্তৃক আদেশ লাভ। যে কাব্য দেবতার আরাধনা, মাহাত্ম-কীর্তন করা হয়; যে কাব্য শ্রবণেও মঙ্গল হয় এবং বিপরীতটিতে হয় অমঙ্গল; যে কাব্য মঙ্গলাধার, এমন কি, যে কাব্য ঘরে রাখলেও মঙ্গল হয়-তাকেই বলা হয় ‘মঙ্গলকাব্য। বাংলা সাহিত্যের নানা শ্রেণির কাব্যে মঙ্গল কথাটির প্রয়োগ থাকলেও কেবল বাংলা লৌকিক দেবতাদের নিয়ে রচিত কাব্যই মঙ্গলকাব্য নামে অভিহিত হয়। মঙ্গলকাব্যে সাধারণত মনসা

পৃষ্ঠা ২৫

ও চণ্ডী এই দুই দেবতার প্রাধান্য বেশি। মঙ্গলকাব্যের বিষয়বস্তু চারটি অংশে বিভক্ত। যথা- বন্দনা, আত্মপরিচয়, দেবখণ্ড এবং নরখণ্ড। এছাড়া বারমাসী, চৌতিশা ও কবির পরিচয়ও উল্লেখ থাকতো। উল্লেখযোগ্য মঙ্গলকাব্য হলো- মনসামঙ্গল, ধর্মমঙ্গল, চণ্ডীমঙ্গল ও অন্নদামঙ্গল প্রভৃতি।

‘চৈতন্যমঙ্গল’, ‘গোবিন্দমঙ্গল’ প্রভৃতি কাব্যের সঙ্গে মঙ্গল নাম থাকলেও এদের সাথে মঙ্গলকাব্যের কোনো যোগসূত্র নেই। এগুলো বৈষ্ণব সাহিত্যের অংশ। বিহারীলাল চক্রবর্তী রচিত ‘সারদামঙ্গল মঙ্গলকাব্য নয়, এটি একটি আধুনিক যুগের কাব্য।

মঙ্গলকাব্যগুলোকে শ্রেণিগত দিক থেকে দু’ভাগে ভাগ করা যায়- (ক) পৌরাণিক শ্রেণি: গৌরীমঙ্গল, ভবানীমঙ্গল, দুর্গামঙ্গল, অন্নদামঙ্গল, কমলামঙ্গল, গঙ্গামঙ্গল, চণ্ডিকামঙ্গল প্রভৃতি। (খ) লৌকিক শ্রেণি: শিবায়ন বা শিবমঙ্গল, মনসামঙ্গল, চণ্ডীমঙ্গল, শীতলামঙ্গল, রায়মঙ্গল, কালিকামঙ্গল (বা বিদ্যাসুন্দর), ষষ্ঠীমঙ্গল, সারদামঙ্গল, সূর্যমঙ্গল প্রভৃতি।

মনসামঙ্গল:

সাপের অধিষ্ঠাত্রী দেবী মনসা। তার অপর নাম কেতকা ও পদ্মাবতী। লৌকিক ভয়ভীতি থেকেই এ দেবীর উদ্ভব। এই দেবীর কাহিনী নিয়ে রচিত কাব্য ‘মনসামঙ্গল’ নামে পরিচিত। কোথাও তা ‘পদ্মাপুরাণ’ নামেও অভিহিত হয়েছে। এ কাব্যের প্রধান চরিত্র চাঁদ সদাগর, বেহুলা এবং লখিন্দর। পূজা দিতে অস্বীকার করায় বণিক চাঁদ সদাগরকে মনসা দেবী ধনহারা ও তার পুত্র লক্ষ্মীন্দরকে সর্পদংশনে হত্যা করে পুত্র হারা করে। বেহুলা লখিন্দরের নব পরিণীতা। কানা হরিদত্ত মনসামঙ্গল তথা মঙ্গলকাব্যের আদিকবি। এছাড়া অন্যান্য কবির মধ্যে নারায়ণ দেব, বিজয় গুপ্ত, বিপ্রদাস পিপিলাই, দ্বিজ বংশীদাস, কেতকাদাস, ক্ষেমানন্দের নাম বিশেষ ভাবে উল্লেখযোগ্য।

চণ্ডীমঙ্গল:

চণ্ডী দেবীর কাহিনী অবলম্বনে রচিত চণ্ডীমঙ্গল কাব্য এ দেশে যথেষ্ট জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিল। মাণিক দত্ত চণ্ডীমঙ্গলের আদিকবি। চণ্ডীমঙ্গলের শ্রেষ্ঠ কবি কবিকঙ্কন মুকুন্দরাম চক্রবর্তী। ভাড়ুদত্ত, ফুল্লরা, ধনপতি সদাগর প্রভৃতি চণ্ডীমঙ্গলের প্রধান চরিত্র। ধনপতি সদাগর ছিলেন উজানীনগরের অধিবাসী।

ধর্মমঙ্গল:

‘ধর্মমঙ্গল’ কাব্যের আদিকবি ময়ূরভট্ট। অন্যান্য কবিদের মধ্যে রূপরাম চক্রবর্তী, ঘনরাম চক্রবর্তী, খেলারাম চক্রবর্তী, শ্যাম পণ্ডিত, সীতারাম দাস, রাজারাম দাস এবং সহদেব চক্রবর্তীর নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। ধর্মঠাকুর নামে কোনো এক পুরুষ দেবতার পূজা হিন্দু সমাজের নিচু স্তরের লোকদের মধ্যে বিশেষত ডোম সমাজে প্রচলিত রয়েছে। ধর্মঠাকুর প্রধানত দাতা, নিঃসন্তান নারীকে সন্তান দান করেন, অনাবৃষ্টি হলে ফসল দেন, কুষ্ঠরোগীকে রোগ থেকে মুক্ত করেন। ধর্মঠাকুরের মাহাত্ম প্রচারের জন্য ‘ধর্মমঙ্গল কাব্য ধারার সূত্রপাত হয়েছে। ধর্মমঙ্গল কাব্যের দুটি কাহিনী হলো- রাজা হরিশ্চন্দ্রের কাহিনী এবং লাউসেনের কাহিনী।

অন্নদামঙ্গল:

চণ্ডী ও অন্নদা অভিন্ন-একই দেবীর দুই নাম। এ দেবীর কাহিনীই অন্নদামঙ্গলে স্থান পেয়েছে। অন্নদামঙ্গল কাব্যের রচয়িতা ভারতচন্দ্র রায়গুণাকর। কবি ভারতচন্দ্র রায়গুণাকর (প্রথম নাগরিক কবি) অষ্টাদশ শতকের তথা মধ্যযুগের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবি। ভারতচন্দ্র প্রাচীন ভুরপুর পরগনার পেঁড়ো অথবা আধুনিক হাওড়া জেলার পাণ্ডুয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি কৃষ্ণনগর রাজসভার কবি ছিলেন।

পৃষ্ঠা ২৬

চর্যাপদমহারাজ কৃষ্ণচন্দ্রের আদেশে তিনি তাঁর শ্রেষ্ঠ কীর্তি ‘অন্নদামঙ্গল’ কাব্যটি রচনা করেন। মহারাজ তাঁকে ‘রায়গুণাকর’ উপাধিতে ভূষিত করেন। অন্নদামঙ্গল কাব্যটি তিন খণ্ডে বিভক্ত। যথা- শিবনারায়ণ, কালিকামঙ্গল এবং মানসিংহ-ভবানন্দ উপাখ্যান।

‘সত্য পীরের পাঁচালী’ কবির অন্য একটি বিখ্যাত গ্রন্থ। অন্নদামঙ্গল কাব্যের অমর উক্তি-

(১) “আমার সন্তান যেন থাকে দুধে-ভাতে”- ঈশ্বরী পাটনী এ প্রার্থনা করেছেন।

(২) বড়র পিরীতি বালির বাঁধ! ক্ষণে হাতে দড়ি, ক্ষণেকে চাঁদ।

(৩) মন্ত্রের সাধন কিংবা শরীর পতন।

(৪) নগর পুড়িলে দেবালয় কি এড়ায়।

MCQ Solution

১. মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যের অন্যতম নিদর্শন কী?

উত্তর: মঙ্গলকাব্য

২. ‘মঙ্গলকাব্য কোন যুগের বাংলা সাহিত্যের নিদর্শন?

উত্তর: মধ্যযুগ

৩. মধ্যযুগীয় এক শ্রেণির ধর্মবিষয়ক আখ্যান কাব্যের উদাহরণ?

উত্তর: মঙ্গলকাব্য

৪. ‘মঙ্গলকাব্য সমূহের বিষ য়বস্তু মূলত?

উত্তর: ধর্মবিষয়ক আখ্যান

৫. নিচের কোনটি মধ্যযুগের কাব্যের প্রধান একটি ধারা?

উত্তর: মঙ্গলকাব্য

৬. মঙ্গলকাব্য রচনার মূলে উল্লিখিত কারণ কি?

উত্তর: স্বপ্নে দেবী কর্তৃক আদেশ লাভ

৭. মঙ্গলকাব্যে কোন দুই দেবতার প্রাধান্য বেশি?

উত্তর: মনসা ও চণ্ডী

৮. কোনো মঙ্গলকাব্যে কয়টি অংশ থাকে?

উত্তর: ২টি

৯. মঙ্গলকাব্যের কবি নন কে?

উত্তর: দাশুরায়

১০. ‘মঙ্গলকাব্যের রচয়িতা নন?

উত্তর: বড়ু চণ্ডীদাস

পৃষ্ঠা ২৭

১১. কোনটি আধুনিকযুগের কাব্য?

উত্তর: সারদামঙ্গল

১২. কোন দেবীর কাহিনী নিয়ে মনসামঙ্গল কাব্য রচিত?

উত্তর: পদ্মাবতী দেবী ও মনসা দেবী

১৩. ‘মনসামঙ্গল কাব্যের আদিকবি কে?

অথবা, ‘মনসামঙ্গল’- এর লেখক কে?

উত্তর: কানাহরি দত্ত

১৪. মুকুন্দরাম চক্রবর্তী কোন ধারার কবি?

উত্তর: চণ্ডীমঙ্গল

১৫. ‘চাঁদ সদাগর’ বাংলা কোন কাব্যধারার চরিত্র?

উত্তর: মনসামঙ্গল

১৬. মঙ্গলকাব্যের কোন চরিত্রটি ‘দেবতা-বিরোধী’ বলে পরিচিত?

উত্তর: চাঁদ সদাগর

১৭. ‘বেহুলা-লখিন্দরের’ কাহিনি পাওয়া যায় কোন মঙ্গলকাব্যে?

উত্তর: মানসামঙ্গল

১৮. মনসামঙ্গল কাব্যের চরিত্র?

উত্তর: বেহুলা, লখিন্দর

১৯. ‘বেহুলা’ চরিত্রটি কোন মঙ্গলকাব্যের সম্পদ?

উত্তর: মনসামঙ্গল

২০. ‘চণ্ডীমঙ্গল’ কাব্যের রচয়িতা?

উত্তর: মুকুন্দরাম চক্রবর্তী

২১. ‘চণ্ডীমঙ্গল’ কাব্যের প্রধান/ শ্রেষ্ঠ কবি কে?

উত্তর: মুকুন্দরাম চক্রবর্তী

পৃষ্ঠা ২৮

২২. ‘ধনপতি সদাগর’ কোন নগরের অধিবাসী ছিলেন?

উত্তর: উজানীনগর

২৩. ‘ভাড়দত্ত’ কোন কাব্যের চরিত্র?

উত্তর: চণ্ডীমঙ্গল

২৪. কোন কবি ‘ধর্মমঙ্গল কাব্যের প্রণেতা?

উত্তর: রূপরাম চক্রবর্তী

২৫. ভুসুট পরগনার পাণ্ডুয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন?

উত্তর: ভারতচন্দ্র রায়গুণাকর

২৬. কবি ভারতচন্দ্রকে রায়গুণাকর উপাধি দিয়েছিলেন কে?

উত্তর: রাজা কৃষ্ণচন্দ্র

২৭. মধ্যযুগে বাংলা সাহিত্যের শ্রেষ্ঠ কবি কে?

উত্তর: ভারতচন্দ্র

২৮. ‘অন্নদামঙ্গল’ কাব্য কে রচনা করেন?

উত্তর: ভারতচন্দ্র রায়গুণাকর

২৯. ভারতচন্দ্র রায়গুণাকর কোন কাব্য রচনা করেন?

উত্তর: অন্নদামঙ্গল

৩০. ভারতচন্দ্র রায়গুণাকর কোন রাজসভার কবি?

উত্তর: কৃষ্ণনগর রাজসভা

৩১. ‘মানসিংহ আনন্দ উপাখ্যান’ কার রচনা?

উত্তর: ভারতচন্দ্র রায়গুণাকর

৩২. ‘আমার সন্তান যেন থাকে দুধে-ভাতে’ লাইনটি নিন্মোক্ত একজনের কাব্যে পাওয়া?

উত্তর: ভারতচন্দ্র রায়

৩৩. ‘আমার সন্তান যেন থাকে দুধেভাতে’ এ প্রার্থনাটি করেছে-

উত্তর: ঈশ্বরী পাটনী

পৃষ্ঠা ২৯

৩৪. ‘আমার সন্তান যেন থাকে দুধে-ভাতে’-বাংলার সাহিত্যের কোন কাব্যে বাঙালির এ প্রার্থনা ধ্বনিত হয়েছে?

উত্তর: অন্নদামঙ্গল

৩৫. “বড়র পিরীত বালির বাঁধ!

ক্ষণে হাতে দড়ি, ক্ষণেকে চাঁদ” চরণ দুটি কার রচনা?

উত্তর: ভারতচন্দ্র রায়

(গ) জীবনী সাহিত্য শ্রী চৈতন্য দেব একজন ধর্মপ্রচারক হলেও মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যে তাঁর প্রভাব ছিল অপরিসীম। এই মহাপুরুষ একটি বাংলা পঙক্তি না লিখলেও তার নামে একটি যুগের সৃষ্টি হয়েছে। বাংলা সাহিত্যে চৈতন্য জীবনীগ্রন্থ ‘কড়চা’ নামে পরিচিত। কড়চা (Biography) শব্দের শাব্দিক অর্থ ডায়রি বা দিনলিপি।

মধ্যযুগ তিন ভাগে বিভক্ত। যথা- (১) প্রাকচৈতন্য যুগ (১৩৫১ থেকে ১৫০০ খ্রি.), (২) চৈতন্য যুগ (১৫০১ থেকে ১৬০০ খ্রি.), (৩) চৈতন্য পরবর্তী যুগ, (১৬০১ থেকে ১৮০০ খ্রি.)

কড়চা: চৈতন্যভাগবত, রচয়িতা; বৃন্দাবন দাস, তথ্য কণিকা; বাংলা ভাষায় শ্রীচৈতন্যের প্রথম জীবনীকাব্য।

কড়চা: চৈতন্যমঙ্গল, রচয়িতা; লোচন দাস, তথ্য কণিকা; নেই।

কড়চা: চৈতন্যচরিতামৃত, রচয়িতা; কৃষ্ণদাস কবিরাজ, তথ্য কণিকা; বাংলাভাষায় সর্বাপেক্ষা তথ্যবহুল শ্রীচৈতন্য জীবনী।

MCQ Solution

১. Biography শব্দটির অর্থ-

উত্তর: কড়চা

২. মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যে কোন ধর্মপ্রচারক-এর প্রভাব অপরিসীম?

উত্তর: শ্রীচৈতন্যদেব

৩. চৈতন্যদেব ছিলেনে?

উত্তর: বৈষ্ণব ধর্মের প্রচারক

পৃষ্ঠা ৩০

৪. শ্রীচৈতন্যদেবের জীবনভিত্তিক প্রথম কাহিনী কাব্য কে রচনা করেন?

উত্তর: বৃন্দাবন দাস

৫. ‘চৈতন্যমঙ্গল’ এর রচয়িতা?

উত্তর: লোচনদাস

৬. চৈতন্য জীবনী কাব্যের শ্রেষ্ঠ কবি কে?

উত্তর: কৃষ্ণদাস কবিরাজ

(ঘ) নাথসাহিত্য প্রাচীন কাল থেকে এ দেশে শিব উপাসক এক শ্রেণির যোগী সম্প্রদায় ছিল, তাদের ধর্মের নাম নাথধর্ম। নাথধর্মের কাহিনী অবলম্বনে রচিত আখ্যায়িকা কাব্য ‘নাথসাহিত্য’ নামে পরিচিত। শেখ ফয়জুল্লাহ এ ধারার আদি কবি। তাঁর নাথধর্মবিষয়ক আখ্যানকাব্য ‘গোরক্ষবিজয়’।

(ঙ) ‘মর্সিয়া’ সাহিত্য ‘মর্সিয়া এক ধরনের শোককাব্য বা শোকগীতি বা বি